পদ্মাসেতু, মেট্রোরেলের পর যোগাযোগ খাতে নতুন যুগে প্রবেশ করতে যাচ্ছে বাংলাদেশ। যানজট নিরসনে দেশে প্রথমবারের মতো চালু হচ্ছে এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে। সিগন্যাল, ট্রাফিক জ্যামবিহীন এমন এক উড়াল সড়ক দেশের মানুষের জন্য এখন আর কল্পনা নয়, বাস্তব।
২ সেপ্টেম্বর নতুন এক ইতিহাসের সাক্ষী হলো বাংলাদেশ। দেশের প্রথম এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে বিমানবন্দর থেকে তেজগাঁও পর্যন্ত অংশের উদ্বোধন করলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। রোববার (৩ সেপ্টেম্বর) সকাল ছয়টা থেকে সর্বসাধারণের ব্যবহারের জন্য খুলে দেয়া হবে এই উড়ালসড়ক। এরপর এই সড়ক দিয়ে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের পাশে কাওলা থেকে ফার্মগেটের তেজগাঁও আসতে সময় লাগবে মাত্র ১০ থেকে ১২ মিনিট।
এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে বা উড়াল মহাসড়ক নির্মাণে নেয়া এই প্রকল্পের উদ্দেশ্য রাজধানীর এক প্রান্ত থেকে আরেক প্রান্তে নিরবচ্ছিন্ন চলাচল নিশ্চিত করা। ২০১১ সালের ১৯ জানুয়ারি প্রকল্পটির চুক্তি স্বাক্ষর হয়। কিন্তু জমি বুঝে না পাওয়া, নকশায় জটিলতা ও অর্থায়নের অভাবে এর নির্মাণ কাজে কেটে গেছে এক যুগের বেশি সময়।
এ কারণে এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে প্রকল্পটি সরকারের অন্যতম ধীরগতির প্রকল্পের তকমাও পায়। তবে কয়েক বছর ধরে প্রকল্পটির বিমান বন্দর থেকে ফার্মগেট পর্যন্ত কাজে গতি পায় কয়েকগুণ। পূর্ণাঙ্গ এক্সপ্রেসওয়েটি হবে ফার্মগেট, তেজগাঁও, মগবাজার হয়ে চিটাগাং রোডের কুতুবখালী পর্যন্ত। মোট ২০ কিলোমিটার সড়কের সাড়ে ১১ কিলোমিটার পথ খুলে দেয়া হচ্ছে প্রথম পর্যায়ে। ঢাকার ট্রাফিক ব্যবস্থাপনার দিনবদলের স্বপ্ন দেখাচ্ছে এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে।
প্রকল্প সূত্রে জানা গেছে, এটি হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর (কাওলা) থেকে শুরু করে মহাখালী, তেজগাঁও, মগবাজার হয়ে কুতুবখালী গিয়ে শেষ হবে। প্রকল্পের সার্বিক অগ্রগতি ৬৫ শতাংশ। ২০২৪ সালের জুনে কাজ শেষ করার লক্ষ্য প্রকল্প সংশ্লিষ্টদের।
হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের দক্ষিণে কাওলা থেকে ফার্মগেট পর্যন্ত অংশের মেইন লাইনের দৈর্ঘ্য ১১ দশমিক ৫ কিমি এবং র্যাম্পের দৈর্ঘ্য ১১ দশমিক শূন্য কিমি। র্যাম্পসহ মোট দৈর্ঘ্য ২২ দশমিক ৫ কিমি। এ অংশে ওঠানামার জন্য ১৫টি র্যাম্প (এয়ারপোর্ট-২, কুড়িল-৩, বনানী-৪, মহাখালী-৩, বিজয় সরণি-২ ও ফার্মগেট-১) রয়েছে। এরমধ্যে ১৩টি র্যাম্প যান চলাচলের জন্য উন্মুক্ত করা হবে।