মঙ্গলবার

২২শে এপ্রিল, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ
৯ই বৈশাখ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

ভূমিকম্পের ঝুঁকি মোকাবিলায় সম্মিলিত সচেতনতার আহ্বান

মুভমেন্ট ফর নেচার

বাংলাদেশের ভূমিকম্পের ঝুঁকি ক্রমেই বাড়ছে। এই বাস্তবতা সামনে এনে সম্মিলিত সচেতনতা ও প্রস্তুতির আহ্বান জানিয়েছে পরিবেশবাদী সংগঠন ‘মুভমেন্ট ফর নেচার’।

শনিবার (১২ এপ্রিল) সংবাদ বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে ভূমিকম্প প্রতিরোধ না করা গেলেও সচেতনতা ও প্রস্তুতির মাধ্যমে এর ক্ষয়ক্ষতি অনেকটাই কমিয়ে আনা সম্ভব বলে জানায় সংগঠনটি।

সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, বাংলাদেশ তিনটি সক্রিয় টেকটোনিক প্লেটের সংযোগস্থলে অবস্থিত হওয়ায় উত্তর, উত্তর-পূর্ব ও পূর্বাঞ্চল ভূমিকম্পের জন্য অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ। রাজধানী ঢাকাও রয়েছে মারাত্মক ঝুঁকির মধ্যে। জাতীয় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা পরিকল্পনার তথ্য অনুযায়ী, একটি বড় ধরনের ভূমিকম্পে দেশে প্রায় ৬ কোটি ১২ লাখ মানুষ ক্ষতির মুখে পড়তে পারে। শুধু রাজধানীতেই ৭ মাত্রার বেশি ভূমিকম্প হলে ৭২ হাজার ভবন ধসে পড়ার আশঙ্কা রয়েছে।

মুভমেন্ট ফর নেচারের আহ্বায়ক এম আর লিটন, সংগঠনের যুগ্ম আহ্বায়ক মামুন আকন্দ, মো. মানিক, সদস্য সচিব মোহাম্মদ মাহবুবুল আলম ও কার্যনির্বাহী সদস্য মো. সজিব উদ্দীন, শুভ চন্দ্র শীল, কানিজ ফাতিমাও যৌথভাবে বিবৃতিতে ভূমিকম্প সচেতনতা বাড়ানোর ওপর গুরুত্বারোপ করেন।

সংগঠনটি বিজ্ঞপ্তিতে আরও জানায়, ‘ভূমিকম্পের ঝুঁকি মোকাবিলায় জনগণের জীবন ও সম্পদ রক্ষার জন্য এখনই প্রয়োজন বাস্তব পদক্ষেপ। সরকারি উদ্যোগের পাশাপাশি প্রতিটি নাগরিককে এগিয়ে আসতে হবে।’

এ ছাড়া সংগঠনটি চারটি মূল করণীয়কে গুরুত্ব দিয়ে তুলে ধরেছে-

১. জনসচেতনতা বৃদ্ধি: স্কুল, কলেজ, মসজিদ, অফিস এবং পাড়া-মহল্লায় ভূমিকম্পকালীন করণীয় সম্পর্কে সচেতনতা গড়ে তোলার আহ্বান জানানো হয়েছে। এতে বলা হয়, নিয়মিত মহড়ার আয়োজন করতে হবে যেন জনগণ জরুরি পরিস্থিতিতে সঠিকভাবে প্রতিক্রিয়া জানাতে পারে।

২. নিরাপদ ভবন নির্মাণ: নির্মাণ বিধিমালা কঠোরভাবে অনুসরণ নিশ্চিত করার পাশাপাশি ঝুঁকিপূর্ণ ভবনগুলো চিহ্নিত করে সংস্কার বা পুনর্নির্মাণের তাগিদ দেওয়া হয়।

৩. জরুরি সেবা প্রস্তুতি: ভূমিকম্পের পর উদ্ধার, চিকিৎসা ও খাদ্য সহায়তা যেন দ্রুত দেওয়া যায়— সে জন্য প্রশাসন, ফায়ার সার্ভিস, হাসপাতালসহ সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলোকে প্রস্তুত রাখার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।

৪. আধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহার: ভূমিকম্প পূর্বাভাস ও ঝুঁকি নিরূপণে আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহারের উপর গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। গবেষণা কার্যক্রমেও জোর দেওয়ার কথা বলা হয়েছে।

সংগঠনটির পক্ষ থেকে আহ্বান জানানো হয়- ‘ভূমিকম্পের ঝুঁকি মোকাবিলায় সম্মিলিত উদ্যোগই আমাদের সবচেয়ে বড় শক্তি। প্রতিটি নাগরিককে ব্যক্তি, পরিবার ও সমাজিক পর্যায়ে প্রস্তুতি নিতে হবে। সচেতন না হলে যে কোনো সময় বড় বিপর্যয় নেমে আসতে পারে।’

ভূমিকম্পের মতো দুর্যোগ থেকে সুরক্ষা নিশ্চিত করতে হলে এখনই প্রয়োজন সম্মিলিত সচেতনতা, পরিকল্পিত প্রস্তুতি এবং বাস্তবমুখী পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানায় সংগঠনটি।

এ বিভাগের আরও সংবাদ

spot_img

সর্বশেষ সংবাদ