‘ওস্তাদ, আল্লাহর দোহায় লাগে। আর খাঁড়াইয়েন না। একটু টাইনা যান। আর ১০টা মিনিট ভেতরে থাকলে সিদ্ধ হইয়া যামু।’ এ আকুতি বাসচালককে উদ্দেশ্য করে এক যাত্রীর। তীব্র গরমে ভরদুপুরে রাজধানীর উত্তরা থেকে যাত্রাবাড়ী রুটে চলাচল করা রাইদা পরিবহনের একটি বাসের পেছনের দিকের সিট থেকে ভেসে আসে এমন আকুতি।
আনারুল ইসলাম নামের ওই যাত্রী পেশায় মুদি দোকানি। বয়স ৩৫-৩৬ বছর হবে। ২১ এপ্রিল দুপুরে ব্যবসায়িক প্রয়োজনে যাচ্ছিলেন কাকরাইলে। বাসে উঠেছেন খিলক্ষেত থেকে। বেলা সাড়ে ১১টার দিকে বাসে উঠেছেন। ১২টার দিকে তার বাস শাহজাদপুরে দাঁড়িয়ে। অর্থাৎ, আধাঘণ্টায় মাত্র ছয় কিলোমিটার রাস্তা পাড়ি দিয়েছেন তিনি। তাকে যেতে হবে আরও ৯-১০ কিলোমিটার।
শুধু আনারুল নন, তীব্র তাপপ্রবাহের মধ্যে ঢাকার গণপরিবহনে চলাচল করা অধিকাংশ যাত্রীই নিদারুণ কষ্টে চলাফেরা করছেন। যানজট, গণপরিবহনের বেহাল দশা, এক সিট থেকে অন্য সিটের কম দূরত্ব, গাদাগাদি করে যাত্রী তোলায় দুর্ভোগ বেড়েছে গণপরিবহনের যাত্রীদের। নারী, শিশু ও বয়স্করা রীতিমতো ঝুঁকি নিয়ে যাতায়াত করছেন।
রোববার সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত ঢাকার কয়েকটি রুটের সড়কে ঘুরে একই চিত্র দেখা গেছে। সরেজমিনে দেখা যায়, অধিকাংশ বাসই লক্কড়-ঝক্কড়। কোনো কোনো বাসের ওপরের ছাদও ভাঙাচোরা, যা দিয়ে সহজেই ভেতরে তীব্র রোদ ঢুকছে। অনেক বাসে নেই ফ্যানও। যেসব বাসে ফ্যান আছে, সেখানেও একটি চালু তো অন্যটি অকেজো। এছাড়া ৩৬ সিট হিসেবে অনুমোদন নেওয়া বাসগুলোতে ৪২-৪৫টি আসন বসিয়ে চলাচল করায় বসে যাতায়াত করেও স্বস্তি পাচ্ছেন না যাত্রীরা।