দুপুরের আলোতে হঠাৎ—
একটি যুদ্ধবিমান পড়ে স্কুলে।
শব্দের ঝাঁঝে থেমে যায় পাখিগুলোর কণ্ঠ
খাতায় লেখা স্বপ্ন পুড়ে ছাই হয় চুপিচুপি।
শ্রেণিকক্ষ,
যেখানে ‘দুইয়ে দুই চার’ শেখে ছোট পাখিগুলো
সেখানে পাটিগণিতের বদলে
জ্বলছে বর্ণমালা, পুড়ছে প্রথম চুমু।
আকাশ কি এতটা ভার নিতে পারে?
শোকের ক্লান্ত ডানা কি বিশ্রাম চায় শিশুর জানালায়?
মা দাঁড়িয়ে ছিলেন স্কুলগেটের ছায়ায়—
হাতে পানি আর টিফিনবক্স
শিশুটি আসার কথা ছিল ঘণ্টা শেষে,
সে আর ফিরল না।
একটি আইডি কার্ড পড়ে আছে ধ্বংসস্তূপে,
খোঁজে পাওয়া যাচ্ছে না তার পরিচয়
কোনোদিন ‘মা’ ডাকবে না—
এখন সে নিঃশব্দ ভাষায় কবিতা।
শহরজুড়ে ছড়িয়ে আছে পোড়া ব্যাগ,
বাতাসে ভাসছে হোমওয়ার্কের শেষ পৃষ্ঠা,
আরও ভাসছে কিছু শব্দ—
‘বাঁচাও’, ‘আগুন’, ‘আম্মু!’
কে ভাবেছে, স্কুলে বিধ্বস্ত হবে যুদ্ধবিমান?
এই শহর,
এই স্কুল,
এই পোড়া ক্লাসরুম—
এখনো আমাদেরই আয়না।
পেছনে দাঁড়িয়ে কাঁদে এক কবি,
লিখতে পারেন না শেষ লাইন—
কারণ, শিশুগুলোর নাম তিনি জানতেন না।

